সুন্দর শহর মাশরাফিদের কিছু দিলেই হয়!

সুন্দর শহর মাশরাফিদের কিছু দিলেই হয়!

 ব্যর্থ ওয়ানডে সিরিজ শেষে শুরু হচ্ছে সাকিব-তামিম-সৌম্যদের টি-টোয়েন্টি মিশন। ছবি: বিসিবি।নেলসন বেশি সুন্দর নাকি নেপিয়ার? উত্তর আলোচনাসাপেক্ষ। নিউজিল্যান্ডের দুই শহরকেই যাঁরা খুব ভালো করে দেখেছেন, আলোচনাটা তাঁদের জন্য। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভারও তাঁদের। একজন ক্রিকেট-পর্যটক হিসেবে খুব অল্প সময়ের অভিজ্ঞতা সৌন্দর্যের প্রতিযোগিতায় দুটোকেই ‘গোল্ডেন এ‍+’ দিতে বলে। নেলসন থেকে নেপিয়ারে আসা বাংলাদেশ দলও মোহাচ্ছন্ন। হোটেল সেনিক টে পানিয়া এখানে ক্রিকেটারদের অস্থায়ী ঠিকানা। রুমের বিশাল কাচের জানালার সামনে দাঁড়ালেই দেখা যায় সমুদ্রের নীল জলরাশি, যেটি নেপিয়ার শহরেরই সবচেয়ে বড় অলংকার। অবশ্য নেপিয়ার সম্পর্কে বাংলাদেশ দলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এখনো আসেনি। সমুদ্র, ফুল আর সুদৃশ্য সেনিক টে পানিয়া হোটেলই তো আর শহরটার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানদণ্ড নয়! এই শহর বাংলাদেশ দলকে কতটা দিল, সেটাও মনে রাখার বিষয়। দেওয়া-নেওয়ার বিষয়টির মীমাংসা হবে কাল ম্যাকলিন পার্কের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে। নেলসনে ওয়ানডে সিরিজ হেরে আসা বাংলাদেশ দল নতুন বছরের প্রথম ম্যাচেই উত্সব করার মতো কিছু পেলে তাদের ভোট নিশ্চিত নেপিয়ারের বাক্সেই পড়বে। এর আগে ম্যাকলিন পার্কে দুটি ওয়ানডে খেলে কোনোটিতেই সুখের অভিজ্ঞতা হয়নি বাংলাদেশ দলের। সুখের অভিজ্ঞতা নিউজিল্যান্ডেই নেই, আলাদা করে ম্যাকলিন পার্কে আসবে কোত্থেকে? এবারও আসবে, সে আশাটাও করতে হবে সতর্ক থেকে। টি-টোয়েন্টির সংস্করণেই যে এখনো সবচেয়ে কাঁচা বাংলাদেশ দল! নিউজিল্যান্ডে এসে ওয়ানডে সিরিজে ধবলধোলাই হওয়াটাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ধরে নিলে গত দুই বছরে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে যেকোনো দলকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো অবস্থায় চলে গেছে বাংলাদেশ। বলতে পারেন এটাই বাংলাদেশ দলের পছন্দের ক্রিকেট। ঢাকায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ জয়ের পর টেস্টেও এখন সম্ভাবনার আলো ফুটছে। সে তুলনায় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ পশ্চাৎপদ এক দলই। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত চারটি টি-টোয়েন্টি খেলে কোনোটিতেই জয় পায়নি বাংলাদেশ দল। সবগুলোতেই হার, দুটিতে অলআউট হতে হয়েছে ৮০ রানের নিচে। এই সংস্করণে সাফল্যের রসায়নটাই যে এখনো তাদের খুব ভালো জানা হয়নি, সেটাই প্রমাণ হয় বারবার। এবার টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটসম্যান-বোলার কার কী করণীয়, সেটা প্রত্যেকের সঙ্গেলাদা করে বসে ঠিক করে দিয়েছেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে ও তাঁর সহকারীরা। বাংলাদেশ দলকে যে স্বপ্নের দিকে নিয়ে যেতে চান হাথুরুসিংহে, তাতে সব সংস্করণেই ভালো দল হয়ে ওঠাটা জরুরি। কোচের স্বপ্ন বাংলাদেশ ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনাল খেলবে, ২০১৯ বিশ্বকাপ জয়েরও দাবি জানাবে। এই লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্যই নাকি দল নিয়ে তাঁর এত গবেষণা, খুঁজে খুঁজে খেলোয়াড় বের করা। বিসিবির ‘এ’ দল নেই বলে জাতীয় দলের আশপাশের খেলোয়াড়দের জাতীয় দলের সঙ্গে রেখে বড় মঞ্চে দেখার চেষ্টা করা। কোচের স্বপ্নটাকে এমনিতে একটু বেশি রঙিন মনে হলেও লক্ষ্য বড় থাকতেই হয়। নয়তো বেশি দূর যাওয়াও যায় না। ঢিল ছুড়ে দশ ফুট নিতে চাইলেই সেটা অন্তত সাত-আট ফুট যায়। পাঁচ ফুট নিতে চাইলে তা তিন ফুটে গিয়েও ঠেকে যেতে পারে। কাজেই দূরকেই লক্ষ্যবস্তু বানাও—হাথুরুসিংহে হচ্ছেন এই দর্শনের লোক। কাল থেকে শুরু টি-টোয়েন্টি সিরিজেও তাই বাংলাদেশের লক্ষ্যটা বড়ই থাকবে।

0 comments:

Post a Comment