মুশফিককে না পেয়েই

মাঠ থেকে হোটেলে ফিরেই যে যাঁর লাগেজ লবিতে এনে রাখছিলেন। আজ সকালে ওয়েলিংটন হয়ে নেলসনের ফ্লাইট। আগের রাতের মধ্যেই জিনিসপত্র গোছগাছ করে রাখাটা জরুরি।
রেইজেস লাটিমার হোটেলের লিফটে লাগেজ নিয়ে নামার সময় মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে দেখা হয়ে গেল তাসকিন আহমেদের। মুখে রাজ্যের অন্ধকার। বোলারদের প্রতিনিধি হিসেবে তাসকিনের মন খারাপ থাকাটাই স্বাভাবিক। মাহমুদউল্লাহ তবু প্রবোধ দিলেন, ‘একটা ম্যাচ এ রকম হতেই পারে। সব ঠিক হয়ে যাবে। এটাই ক্রিকেট।’

গাপটিলকে বেশ দ্রুতই আউট করে মাশরাফি-সাকিবের অভিনন্দন পেলেন মোস্তাফিজ। তবে ছন্দটা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেননি বাঁহাতি পেসার। নিউজিল্যান্ডের কাছে প্রথম ওয়ানডেতে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে মেনে নিতে হয়েছে বড় পরাজয় l ছবি: বিসিবি

নিউজিল্যান্ডের মাঠ একটু ছোট। তার ওপর হ্যাগলি ওভালের উইকেট দারুণ ব্যাটিংবান্ধব। ২৮০-৩০০ রানও এই মাঠে তাড়া করে জেতা সম্ভব বলে মনে করছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু ৩৪১ রান তাড়া করার জন্য একটু বেশিই। প্রতিপক্ষের স্কোর এ রকম উচ্চতায় চলে গেলে পরে ব্যাটসম্যানরা কতটুকু করতে পারলেন, সেটা আর বিবেচ্য থাকে না। তার ওপর বাংলাদেশের স্কোর ২৬৪ খুব খারাপও নয়, সেটাও ব্যাটিংয়ে পুরো মুশফিককে না পেয়েই। ব্যাটিংয়ে নামার আগেই কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে যেতে হলো বোলারদের। এই ম্যাচ বাংলাদেশ হারলে বোলারদের জন্যই হারবে। তারা কেন ৩৪১ করতে দিল নিউজিল্যান্ডকে? নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে হারের দায় বোলারদের ওপর স্বয়ংক্রিয়ভাবেই পড়ছে। তাঁদেরই একজন প্রতিনিধি হয়ে তাসকিনের মন ভালো থাকে কী করে?
তাসকিন-মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে দেখা হওয়ার একটু আগে হোটেলের সামনেই কথা হচ্ছিল তামিম ইকবালের সঙ্গে। নিউজিল্যান্ডের রানটা কি একটু বেশিই হয়ে গেল? তামিমের উত্তর ছিল, ‘বেশি তো বটেই...ওরা ৩৪১ করার পরই তো ম্যাচ শেষ।’ তবু খেলার পর নাকি কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে এ নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্য করেননি। হয়তো ফলাফলটাকে তিনি স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়দের কাছে হ্যাগলি ওভালের উইকেট হাতের তালুর মতো চেনা। হাজার হাজার মাইল দূর থেকে আসা বাংলাদেশ দলের কল্পনা ২৮০-৩০০ পর্যন্ত গেলে স্বাগতিক হিসেবে তো নিউজিল্যান্ড ৩৪১ করতেই পারে।
তবে বাংলাদেশের বোলারদের জন্য দিনটা ছিল আসলেই খারাপ। মোস্তাফিজুর রহমানের কথাই ধরুন। ১০ ওভারে ২ উইকেট নিলেও রান দিয়েছেন ৬২। এখন পর্যন্ত খেলা ১০টি ওয়ানডেতে এই প্রথম ৬০-এর ওপরে রান দিলেন। অন্য বোলারদের কেউ মোস্তাফিজের মতো ‘রেকর্ড’ না করলেও খুব যে ভালো বল করেননি, সেটা স্কোরকার্ডই বলে দেয়।
ফেরার ম্যাচে মোস্তাফিজের পারফরম্যান্স সম্পর্কে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার মূল্যায়ন, ‘মোটামুটি ঠিকঠাক ছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও উন্নতি আসবে।’ তবে সার্বিকভাবে বোলিং নিয়ে সন্তুষ্ট নন তিনিও, ‘আমরা একটু বেশি শর্ট বল করেছি। এই কন্ডিশনে শর্ট বল অবশ্যই করতে হবে, তবে তা কার্যকরভাবে। যে রকম নিউজিল্যান্ডের বোলাররা করেছে। তাদের শর্ট বলগুলো এসেছে আমাদের মাথা বরাবর। আমাদেরগুলো ছিল তাদের বুক উচ্চতায়।’
মাশরাফি যেটা বলছেন সেটার সঙ্গে বোলারদের সামর্থ্যেরও একটা যোগসূত্র আছে। নিউজিল্যান্ডের বোলারদের সঙ্গে বাংলাদেশের বোলারদের সামর্থ্যের তুলনা তো করতেই হবে, উইকেট-কন্ডিশন বোঝারও একটা ব্যাপার আছে। হ্যাগলি ওভালের উইকেট ব্যাটিং সহায়ক—এটুকু উইকেটের চেহারা দেখেই বোঝা গেলেও একটা উইকেটের সব দিক বুঝে উঠতে সে ধরনের উইকেটে খেলার অভ্যাস থাকাটও জরুরি। বাংলাদেশের পেসাররা সেই সুযোগ কতটুকুই বা পান!
পেস বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ মাশরাফি-তাসকিনদের দায়িত্ব নিয়েই তুলে ধরেছিলেন সমস্যাটা। চোখের সামনে ছাত্রদের এভাবে মার খেতে দেখে নিশ্চয়ই ভালো লাগেনি তাঁর। হোটেলে ফেরার পর রাশভারী এই ক্যারিবিয়ানকে হয়তো সে কারণেই আরও গম্ভীর লাগল। জ্যামাইকার কিংস্টন থেকে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও নিউজিল্যান্ডের ছয়টি বিমানবন্দর ঘুরিয়ে ওয়ালশকে ক্রাইস্টচার্চে আনতে এবং আবার একই পথে ফেরত পাঠাতে নাকি খরচ পড়ছে প্রায় ২৯ লাখ টাকা! টাকাটা বিসিবির হলেও এর বিনিময়ে নিশ্চয়ই এমন বোলিং দেখতে আসেননি ওয়ালশ। এত টাকা নাসাকে দিলে পৃথিবীর কাছের কোনো গ্রহে ঘুরে আসা যেত কি না, তা নিয়ে ক্রাইস্টচার্চে এখন রীতিমতো গবেষণা চলছে।
মাশরাফির কথায় অবশ্য ওয়ালশ আর শিষ্যরা কিছুটা সান্ত্বনা পেতে পারেন। ব্যাটিং-বোলিংয়ের তুলনায় যে জায়গায় উন্নতি করাটা সহজ ও কম সময়সাপেক্ষ, সেই ফিল্ডিংয়েও যে ব্যর্থই বাংলাদেশ দল। ফিল্ডিং নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি ইংরেজি ‘ল্যাথারজিক’ শব্দটাই ব্যবহার করলেন, ‘আমরা ফিল্ডিংয়ে অনেক ল্যাথারজিক ছিলাম। অনেক দুই-তিন হয়েছে যেগুলো চাইলে আটকানো যেত। ওখানেই ওদের ২০ রানের মতো বেশি হয়েছে। বোলিং-ফিল্ডিং ভালো হলে আমরা ৪০টি রান কম দিতাম। বাড়তি রানটাই ভুগিয়েছে।’
মাশরাফির বক্তব্যে যেন তামিমের কথারই প্রতিধ্বনি। বাংলাদেশ যতই শেষ পর্যন্ত ২৬৪ রান করুক, খেলা আসলে নিউজিল্যান্ড ৩৪১ করার পরই শেষ।


চার পেইসার নিয়ে খেলছেনা প্রথম ম্যাচে.ব্যাটিং শক্তিতে মনযোগ!! . . . সম্ভব একাদশ! উইকেট হবে ব্যাটিং সহায়ক! তামিম ইকবাল তো থাকছেই তার সাথে ওপেনিং কে করবে এটা বলা যাচ্ছেনা। ইমরুল কায়েছ খেলার সম্ভবনা আছে তবে আবার নেই! তবে সৌম্য সকার অপেনিং করার সম্ভবনাই বেশি উজ্জল। সাব্বির রহমান,মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ,সাকিব আল

 https://youtu.be/pai8Rc0I3R0

হাসান,মুশফিকুর রহিম,মোসাদ্দেক হুসাইন সৌকত! মাশরাফি বিন মুর্তজা,তাসকিন এ কজন থাকছে। মুস্তাফিজ খেলবে কিনা এটা নিরর্বর করছে মুস্তাফিজের উপর! যদি মুস্তাফিজ না খেলে তবে সে ক্ষেত্রে রুবেল খেলবে! _ ইমরুল/তানভীর/মিরাজ থেকে যে কোন একজন. হয়তো তানভীরের/মিরাজের দিকেই বেশি নজর দেওয়া হবে কেননা স্পিনার লাগবে! সে ক্ষেত্রে ইমরুল,ও শুভাশিষ থাকতে নাও পারে। _ইমরুল না থাকার করন হলো, পার্টাইমার ইসপিনার দিয়ে আপনি কতক্ষন বল করাবেন! যদি তার মাইর খায় তর পর! কথায় আছে না বাকির কাজ ফাঁকি! তাই.তারনভীর/মিরাজ __সাকিব একা স্পিনার!! ক্যাপ্টেন বিপদে পড়বে পরে স্পিনার যদি না থাকে!
নিউ জিল্যান্ডে শুরুটা ভালো চান সাকিব

 দীর্ঘ দিন পর দেশের বাইরে সিরিজ। সেটিও নিউ জিল্যান্ডের মতো কঠিন কন্ডিশনে। সাকিব আল হাসান মানছেন, বাংলাদেশের অপেক্ষায় কঠিন চ্যালেঞ্জ। তবে এই অলরাউন্ডারের বিশ্বাস, শুরুটা ভালো করতে পারলে খারাপ করবে না বাংলাদেশ। বিপিএলের শিরোপাটা এবার জিততে মরিয়া ছিলেন সাকিব। বারবার বলেছেন সেটি। সেই লক্ষ্য পূরণের পর এবার জাতীয় দায়িত্ব পালনের পালা। অস্ট্রেলিয়ায় প্রস্তুতি ক্যাম্প করে বাংলাদেশ যাবে নিউ জিল্যান্ডে, সফরকারী দলগুলির জন্য যে দেশ সব সময়ই ছুঁড়ে দেয় কঠিন চ্যালেঞ্জ। অন্য মহাদেশের দলগুলি তো বটেই, তাসমান সাগরের ওপারের প্রতিবেশী অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত খেই হারিয়ে ফেলে কিউই দেশে গিয়ে। অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশন তবু খানিকটা কাছাকাছি। সিডনির ক্যাম্পটিকে তাই কাজে লাগানোয় গুরুত্ব দিচ্ছেন সাকিব। আর আশায় আছেন ওয়ানডে সিরিজে ভালো শুরুর। “অনেক দিন পর আমরা দেশের বাইরে খেলতে যাচ্ছি। কন্ডিশন পুরো ভিন্ন। আমাদের জন্য হবে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। আশা করি অস্ট্রেলিয়ার ক্যাম্পটি অনেক কাজে দেবে। এর পর ওয়ানডে সিরিজটি যদি আমরা ভালো ভাবে শুরু করতে পারি, তাহলে আশা করি, পুরো সিরিজই ভালো যাবে আমাদের।” নিউ জিল্যান্ডে বাংলাদেশের সফরের শুরু ওয়ানডে দিয়েই। ২৬ ডিসেম্বর প্রথম ওয়ানডে দিয়ে শুরু তিন ওয়ানডে, তিন টি-টোয়েন্টি, দুই টেস্টের সফর। ওয়ানডে সিরিজের আগে ২২ ডিসেম্বর আছে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ।
মাঠে নেমেই দুর্দান্ত সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন আশরাফুল



প্রায় তিন বছর পর ব্যাট হাতে হোম অব ক্রিকেট মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে নামলেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল। আর নেমেই দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ-বিপিএলে স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগে ৩ বছর নিষিদ্ধ হয়েছিলেন আশরাফুল। নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয় গত আগস্টে। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে আরও অপেক্ষা করতে হবে আশরাফুলকে।
আগামী মঙ্গলবার যুবাদের এশিয়া কাপে অংশ নিতে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৯ দল শ্রীলংকায় যাবে। তার আগে রোববার বিকালে প্রস্তুতি ম্যাচের আয়োজন করা হয়। ১৯ দলের ৫ জন ছিল আশরাফুলের লাল দলে।
আগে ব্যাট করতে নেমে আশরাফুলের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ৫০ ওভারে ২২৪ রান করেছে লাল দল। আশরাফুল ১১০ বলে ১১৫ রান করেন।
 সুইস ব্যাংকে রোনালদোর ২ কোটি ইউরো 

 

   
রোনালদোর আয়ের বিবরণী প্রকাশ করল এল মুন্ডো। ফাইল ছবিক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর আয় বিবরণী প্রকাশ করেছে স্পেনের একটি পত্রিকা। তাতে দেখা গেছে, ২০১৫ সালে রোনালদোর ঘোষিত আয় ছিল ২২ কোটি ৫০ লাখ ইউরো। আর সুইজারল্যান্ডের ২২টি ব্যাংকে তাঁর দুই কোটি ইউরো জমা আছে। আর নিজের দেশ পর্তুগালের পাঁচটি ব্যাংকে আছে মাত্র ৩৩ হাজার ৪৫২ ইউরো। এই বিবরণী রোনালদো নিজে জমা দিয়েছেন স্পেনের আয়কর দপ্তরে। রোনালদোর মুখপাত্রের পক্ষ থেকে যে আয়ের ​বিবরণী প্রকাশ করা হয়েছিল, তার সঙ্গে এল মুন্ডোর খবর মিলে যায়।

সম্প্রতি রোনালদোর বিরুদ্ধে কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রোনালদো নাকি ১৫ কোটি ইউরো কর ফাঁকি দিয়েছেন। তবে রোনালদোর পক্ষ থেকে এই দাবি অস্বীকার করা হয়েছে। সততা প্রমাণে নিজের আয়ের সংক্ষিপ্ত বিবরণী প্রকাশও করেছেন। এবার আরও বিস্তারিত আয় বিবরণী ​প্রকাশ করল এল মুন্ডো।

প্রত্যেক বছর আয়কর দপ্তরে কর্মজীবীদের রিটার্ন দাখিল করতে হয়। সেই রিটার্নে তাঁরা এক বছরে তাঁদের আয় দেখান। আয়কর কম করানোর জন্য অনেকে নিজের আয় লুকান। স্পেনের মতো দেশে ক্ষেত্রবিশেষে প্রায় ৪০ শতাংশও আয়কর দিতে হয়। মিলিয়ন ইউরো যাঁরা আয় করেন, দেখা যায় বেতনের অর্ধেকের কাছাকাছি অঙ্ক করের পেছনেই চলে যাচ্ছে। এ কারণে সেসব দেশে কর ফাঁকির চেষ্টা চলে। আর কর বিভাগের পক্ষ থেকে চলে ফাঁকিবাজদের জালের মধ্যে ফেলা। এভাবেই লিওনেল মেসির কর ফাঁকির বিষয়টি ধরা পড়েছে। এবার রোনালদোর দিকে অভিযোগের তির।

রোনালদো কর ফাঁকি দিয়েছেন কি না, এ আলোচনার মধ্যেই এবার এল মুন্ডো রোনালদোর আয়ের রিটার্ন প্রকাশ করল। তাতে দেখা গেছে, ফুটবল খেলেই বরং রোনালদোর আয় কম। কারণ স্পেনের ভেতরে তিনি আয় করেছেন ২ কোটি ৩৫ লাখ ইউরো, স্পেনের বাইরে ২০ কোটি ৩৭ লাখ।

সুইস ব্যাংকে যে ২ কোটি ইউরো রেখেছেন, এর ১ কোটি ৭০ লাখই একটি ব্যাংকে তিনটি ভিন্ন হিসাবে। বাকি ৩০ লাখ ইউরো রেখেছেন সুইজারল্যান্ডের ১৯টি ভিন্ন ভিন্ন আঞ্চলিক ব্যাংকের শাখায়।

এ ছাড়া রোনালদোর শেয়ারবাজারে কিছু বিনিয়োগ আছে। আছে বন্ড, রিয়েস্ট স্টেট বিনিয়োগ।
সিডনিতেই তৈরি হবেন মোস্তাফিজ

 
মোস্তাফিজুর রহমান 
 দেখুন মোস্তাফিজুর রহমান এর রোমাঞ্চ কর উইকেট  ভিডিও 
VID-20160418-WA0013.mp4 - 829 KB




মোস্তাফিজুর রহমান কথা দিলেন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় কথা বলবেন। কাঁধের অস্ত্রোপচার, পুনর্বাসন, অনুশীলন নির্বিঘ্নে সারতে দীর্ঘদিন সংবাদমাধ্যম এড়িয়ে চলেছেন বাঁহাতি পেসার। যতবারই তাঁর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয়েছে, ‘কিচ্ছু জানি না’ কিংবা ‘আগে সুস্থ হয়ে উঠি’ বলে এড়িয়ে গেছেন। অবশেষে ‘ফিজ’ কিছু বলবেন বলেই সাগ্রহে বিসিবি একাডেমি ভবনে তাঁর জন্য অপেক্ষা করতে হয়।

৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বিমানবন্দরে রওনা হওয়ার আগে একটু সময়ের জন্য পাওয়া যায় মোস্তাফিজকে। চোখে-মুখে ফিটনেস ফিরে পাওয়ার আনন্দ। জাতীয় দলের বাইরে থাকার কষ্টটা কেমন বুঝেছেন মোস্তাফিজ। তবে এই বাস্তবতা তিনি মেনে নিচ্ছেন, ‘খেলতে গেলে ভালো-খারাপ সময় আসবে। এটা বলে তো লাভ নেই।’

পেছনে যা হওয়ার হয়েছে, মোস্তাফিজের চোখ এখন সামনে। দীর্ঘ পুনর্বাসনপ্রক্রিয়া শেষে বাঁহাতি পেসার তৈরি হয়েছেন নিউজিল্যান্ড সফরের জন্য। আগে কখনো সেখানে খেলা হয়নি, তাই বাড়তি রোমাঞ্চ কাজ করছে তাঁর মধ্যে। নিজের সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন কিউইদের বিপক্ষেই। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইডেন গার্ডেনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিয়েছেন ২২ রানে ৫ উইকেট, ক্রিকেটের এই সংস্করণে যেটি তাঁর সেরা বোলিং। নয় মাস পর তাদের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে যখন ফিরবেন, নিশ্চয়ই আত্মবিশ্বাসী করবে বিশ্বকাপের বোলিংটা। মোস্তাফিজের আসল অনুপ্রেরণা অবশ্য তাঁর ক্যারিয়ারটাই, ‘নিজের সব পারফরম্যান্সই আমার ভালো লাগে। এবারও ভালো লাগবে।’
আবির্ভাবেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হইচই ফেলা দেওয়া মোস্তাফিজ বোলিংয়ে ফিরলে কিছু একটা হবেই—এমন একটা বিশ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশ দলে। কবে তিনি মাঠে নামবেন—কাটার, ইয়র্কার, স্লোয়ারে এলোমেলো করে দেবেন প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের! তাঁর বোলিং-সৌন্দর্যে ডুব দেওয়ার অপেক্ষায় আসলে সবাই। অস্ট্রেলিয়ায় রওনা হওয়ার আগে ট্রেনার-বিসিবির চিকিৎসক জানিয়েছেন, মোস্তাফিজ অনুশীলনে সামর্থ্যের প্রায় ৯০ শতাংশ দিয়ে বল করেছেন। কিন্তু ‘স্টক’ বল নিয়ে কাজ করা হয়নি তাঁর। মোস্তাফিজ আশাবাদী, সিডনিতে নয় দিনের প্রস্তুতি ক্যাম্পেই নিজেকে শতভাগ তৈরি করে নেবেন, ‘এখন ভালো আছি। সবকিছু ভালো যাচ্ছে। নিজের বলগুলো নিয়ে কাজ করার সময় আছে।’
বিদায় নিয়ে যখন ভরা মাইক্রোবাসে উঠবেন, রসিকতা করেই মোস্তাফিজের প্রশ্ন, ‘আমার জায়গা আছে?’ দ্রুত ফাঁকা সিটে গিয়ে বসেন ২১ বছর বয়সী পেসার। ২টি টেস্ট, ৯টি ওয়ানডে, ১৩টি টি-টোয়েন্টি খেলা মোস্তাফিজের ছোট্ট ক্যারিয়ারের সঙ্গে ছবিটা মিলিয়ে নিতে পারেন, চোটে পড়ে দীর্ঘদিন বাইরে থাকলেও দলে তাঁর জায়গাটা কেউ নিতে পারেনি।
[URL=http://up07.net/wcyf93xr98tk]VID-20160418-WA0013.mp4 -  829 KB[/URL]

বাংলাদেশকে নিয়ে ভয়ে আছেন সাঙ্গাকারা!


  ১০ ডিসেম্বর, ২০১৬


 মেহেদী মারুফদের মতো তরুণদের নিয়ে উচ্ছ্বসিত সাঙ্গাকারা। ছবি-শামসুল হক।২০১৫ বিপিএলে ১০ ম্যাচে ৩৪৯ রান করে কুমার সাঙ্গাকারা ছিলেন ব্যাটসম্যানদের তালিকায় সবার ওপরে। এবার তাঁর রানটা গতবারের চেয়েও বেশি, ১৩ ম্যাচে ৩৭০। তবুও লঙ্কান কিংবদন্তির জায়গা হয়নি শীর্ষ তিনে! ১৩ ম্যাচে ৪৭৬ রান করে সবার ওপরে তামিম ইকবাল, ১৪ ম্যাচে ৩৯৬ করে দুইয়ে মাহমুদউল্লাহ ও ১৫ ম্যাচে ৩৭৭ রানে তিনে সাব্বির রহমান।

বোলিংয়ের শীর্ষ তিনে বিদেশি বোলার থাকলেও সেরা দুইয়ে থাকার সুযোগ ছিল শফিউল ইসলাম ও মোহাম্মদ শহীদেরও। চোটে ছিটকে পড়ায় সেটি সম্ভব হয়নি বাংলাদেশের দুই পেসারের। তবে এটা ঠিক, এবার বিপিএল স্থানীয়দের দাপটই বেশি। জাতীয় দলের তারকা খেলোয়াড়দের সঙ্গে আলো ছড়িয়েছেন তরুণেরাও।

 http://up07.net/wcyf93xr98tk?killcode=zx1tonadio

 অনেক ‘অচেনা’ খেলোয়াড় চলে এসেছেন পাদপ্রদীপের আলোয়। টুর্নামেন্টে স্থানীয় তরুণ খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ সাঙ্গাকারা। লঙ্কান কিংবদন্তি তো ভয়ই পাচ্ছেন, মার্চে শ্রীলঙ্কা সফরে বাংলাদেশের সামনে নিজ দেশ কেমন যে খেলে! বিপিএল ফাইনালের নায়ক কাল ম্যাচ শেষেই বললেন, ‘যেভাবে বাংলাদেশে দুর্দান্ত তরুণ খেলোয়াড়েরা উঠে আসছে কিছুটা ভয়ই পেয়েছি! শ্রীলঙ্কার জন্য সিরিজটা কঠিনই হবে।’ সাঙ্গাকারা উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশের তরুণ প্রতিভাদের নিয়ে, ‘বাংলাদেশের স্পিন মজুদ ভালো, পেস আক্রমণ ভালো। সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এসেছে ফিটনেসে। যেভাবে তরুণ ব্যাটসম্যান বেরিয়ে আসছে, সেটা খুবই রোমাঞ্চকর বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তারা দুর্দান্ত। সবাই টেস্টেও ভালো করবে। আশা করি এটা বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক হবে।’ অসাধারণ নেতৃত্ব দিয়ে রাজশাহী কিংসকে ফাইনালে তুলেছেন ড্যারেন স্যামি। দুবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী এই ক্যারিবীয় অলরাউন্ডারও মুগ্ধ টুর্নামেন্টে স্থানীয় তরুণ খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে, ‘টুর্নামেন্ট থেকে অনেক তরুণ খেলোয়াড় বেরিয়ে এসেছে। এটা বাংলাদেশের জন্য ভালো। তরুণেরা সিনিয়র ও বিদেশি খেলোয়াড়দের কাছে আসছে, শিখছে।’ বড় তারকাদের ছায়ায় পড়ে না থেকে নিজেদের দারুণভাবে চেনানো—অনেক নেতিবাচক খবরের ভিড়ে এই বিপিএলের প্রাপ্তি বোধ হয় এটাই।

সাকিব-তামিমের বিকল্প কাউকে দেখছেন না মাশরাফি ০৯ ডিসেম্বর , ২০১৬ নিউজিল্যান্ড সিরিজের আগে বাংলাদেশের দুই অধিনায়ক কতটা প্রস্তুত? ছবি: শামসুল হকবাংলাদেশ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক তো আফসোসই করছেন, সর্বশেষ ইংল্যান্ড সিরিজে মোস্তাফিজ থাকলে টেস্ট ও ওয়ানডে দুটি সিরিজই জিততে পারত দল। বড় দলের রিজার্ভ বেঞ্চ সব সময়ই শক্তিশালী হয়, থাকে অনেক বদলি খেলোয়াড়। গত দুই বছরে বাংলাদেশ অসাধারণ খেলেছে ঠিকই, তবে দলে এখনো পর্যাপ্ত বদলি খেলোয়াড় নেই। এ নিয়ে নিউজিল্যান্ড সফর-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে আক্ষেপই করলেন মাশরাফি, ‘প্রায়ই শুনি আমাদের অনেক বদলি খেলোয়াড় আছে। কিন্তু আমি তেমন বদলি খেলোয়াড় দেখি না। যদি সাকিবের বদলি কাউকে খেলাতে চান, দেখবেন নেই। তামিমের বদলি পাওয়াও কঠিন। এটা দল ও খেলোয়াড়ের জন্যও কঠিন। তবে ধীরে ধীরে আমাদের বদলি খেলোয়াড় তৈরি হচ্ছে। আরও সময় লাগবে।’ কোনো সিরিজ বা টুর্নামেন্টের আগে ছন্দে থাকা খেলোয়াড় চোটে পড়লে দলে কতটা প্রভাব পড়ে, সেটির একটি উদাহরণ দিলেন মাশরাফি, ‘সর্বশেষ ইংল্যান্ড সিরিজে আমরা মোস্তাফিজকে পাইনি। কিছুটা হলেও ক্ষতি হয়েছে। ও থাকলে হয়তো দুটি টেস্টই কিংবা ওয়ানডে সিরিজ জিততে পারতাম। আমাদের সেরা খেলোয়াড়দের ফিট থাকা জরুরি। মোস্তাফিজের সঙ্গে কালও কথা হয়েছে। এখন সে মোটামুটি ভালো। আরও কিছুদিন সময় আছে। আবার এর মধ্যে দুজন চোটে পড়েছে। সমন্বয় করে নিতে হবে।’ নিউজিল্যান্ড সফরের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়ে গেছে কাল। বাংলাদেশ দলের একাংশ কাল রাতেই উড়াল দিয়েছে। বাকিরা যাবেন আগামীকাল রাতে। দেশের মাটিতে গত দুই বছরে বেশির ভাগ সিরিজই জেতা মাশরাফিদের সামনে এবার কঠিন চ্যালেঞ্জ। দেশের মাটির সাফল্যের অনুবাদ নিউজিল্যান্ডেও করতে পারার বিষয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘দেড়-দুই বছর আগে আমরা লক্ষ্য ঠিক করেছিলাম, দেশে অন্তত ৮০ শতাংশ ম্যাচ জিতব। আমরা তাতে সফল হয়েছি। এখন ভিন্ন চ্যালেঞ্জ, দেশের বাইরে খেলা। বড় দলগুলোর জন্যই এটা কঠিন, আমাদের জন্য আরও বেশি কঠিন। নিউজিল্যান্ডের আবহাওয়া একটু অন্য রকম। তবে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে যেভাবে দেশের মাটিতে খেলেছি, ভালো খেলার স্মৃতিগুলো যদি মনে করে ওখানেও খেলতে পারি আশা করি ভালো কিছু হবে।’


আজ বিপিএল ফাইনাল। খুব কি মন ভরেছে? নাকি ভরেনি? প্রত্যাশা কি মেটাতে পেরেছে সব তারকাই?


তৃষ্ণা মেটাতে পারেননি গেইল। ছবি: প্রথম আলো‘আমাদের হয়তো তার কাছ থেকে আরও বেশি আশা ছিল। সেটা পূরণ করতে না পারলেও ও মনপ্রাণ দিয়েই চেষ্টা করেছে।’
এলিমিনেটরে হেরে কিছুক্ষণ আগে চিটাগং ভাইকিংস বিদায় নিয়েছে টুর্নামেন্ট থেকে। ম্যাচের পরই সংবাদ সম্মেলনে এসে সতীর্থ ক্রিস গেইলকে নিয়ে কথাগুলো বললেন ভাইকিংস অধিনায়ক তামিম ইকবাল। সেদিন সংবাদ সম্মেলনে কোনো সতীর্থকে নিয়েই নেতিবাচক কিছু বলেননি তামিম, বরং অভিনন্দন জানিয়েছেন সবাইকে। গেইলের ক্ষেত্রেও একই।
তবে একটু হতাশাও কি ছিল না তামিমের? বা চিটাগাং সমর্থকদের? বড় আশা করে নিয়ে আসা হয়েছিল বিপিএলে আগের তিন আসরে তিনটি সেঞ্চুরি করা গেইলকে। গেইলও এসে বেশ তাঁর মতো করে আওয়াজ তুললেন—এবার হবে ছক্কা বৃষ্টি। কিন্তু এবার একটা ফিফটিও আসেনি টি-টোয়েন্টির ফেরিওয়ালার ব্যাট থেকে। মোট রান মিলিয়েই সেঞ্চুরি পেরিয়েছে একটুর জন্য, ৫ ম্যাচে রান ১০৯। গেইলের ব্যাট যা একটু-আধটু হেসেছে রাজশাহী কিংস ও রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ম্যাচে, দুটিতেই অবশ্য আউট চল্লিশের ঘরে। সর্বোচ্চ ৪৪, রাজশাহীর বিপক্ষে।
সবচেয়ে বেশি হতাশ করেছেন সৌম্য সরকার। কি জাতীয় দল, কি ঘরোয়া ক্রিকেট—রানই যেন হারিয়ে গেছে তাঁর ব্যাট থেকে। ১২ ম্যাচে রান করেছেন মাত্র ১৩৫। সর্বোচ্চ ইনিংসটাই মাত্র ২৬ রানের! ১২.২৭ গড়, সৌম্য ঠিক রংপুরের ‘আইকন’ হতে পারেননি।
ব্যাটসম্যানদের তালিকায় ২১ নম্বরে, বোলিংয়ে সাকিব ১৩-এর বাইরে! ছবি: প্রথম আলোশুধু বরিশাল বুলসের বিপক্ষে ৬৯ রানের একটা ইনিংস বাদ দিলে ডোয়াইন স্মিথের বিপিএলও কেটেছে হতাশায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিস্ফোরক এই ব্যাটসম্যান চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে আটটি ম্যাচ খেলেছেন, রান করেছেন মাত্র ১৬৩। বরিশালের সঙ্গে ম্যাচটি বাদ দিলে বাকি সাত ম্যাচে মাত্র ৯৪! অবশ্য চার-ছক্কা ভালোই মেরেছেন স্মিথ। চার ১৯টি, ছক্কা ৬টি।
১৩ ম্যাচে ১২ ইনিংস, তাতে ২১৪ রান। বল হাতে ১১ উইকেট। সাকিব আল হাসানের পারফরম্যান্স কেমন ছিল? একদমই সাকিবীয় নয়। বরং বেশ ওপরের দিকে ব্যাটিং করেছেন, ১২ ইনিংসের ১০ বারই আউট হয়েছেন—ব্যাট করার যথেষ্ট সুযোগ পাননি এমন দাবি করার সুযোগ নেই। সেই সাকিব রান করাদের তালিকায় পড়ে আছেন ২১ নম্বরে। সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় ১৩ জনের মধ্যেই নেই। একেকটা উইকেট পেতে খরচ করেছেন ২৮ রান। কোনো ম্যাচেই ২টির বেশি উইকেট নেই।
গত ​বিপিএলের চমক ছিলেন আবু হায়দার। দেশি বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট (১৯টি) নিয়ে নিজেকে চিনিয়েছিলেন। এবারও তাঁর ওপর প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু এবার উদযাপনের সুযোগই আবু হায়দার পেলেন মাত্র চারবার। ৭ ম্যাচে ২৫ ওভার করে বরিশাল বুলস পেসার উইকেট পেলেন মাত্র চারটি!
ডোয়াইন ব্রাভো আর শহীদ আফ্রিদিরাও নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। ব্রাভো অলরাউন্ডার পরিচয় ভুলে পুরোদস্তুর বোলার হয়ে গেছেন। ১২ ম্যাচে ২০ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হয়েও কেন ফ্লপ তা​লিকায়? ব্যাটিংয়ে যে ৮ ইনিংসে রান করেছেন মাত্র ৯১। প্রথম দিকে ওপরে ব্যাটিং করলেও ফর্ম দেখেই নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল টপঅর্ডার থেকে। ব্যাটসম্যান ব্রাভো মোটের পর ফ্লপ।
আফ্রিদিরও গল্পটা একই। ১১ ম্যাচে রংপুর রাইডার্স অলরাউন্ডার উইকেট নিয়েছেন ১৭টি। কিন্তু ব্যাট হাতে ঠিক অতটা আলো ছড়াতে পারেননি। ৮ ইনিংসে রান ১১৯। 'আফ্রিদি-ঝড়' দেখার সুযোগ এক ম্যাচেই যা পেয়েছিলেন রংপুর সমর্থকেরা, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষে। ১৯ বলে তিন চার আর দুই ছক্কায় করেন ৩৮ রান।
ভয়কাতুরে! ছবি: প্রথম আলোকুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ব্যাটসম্যানদের মধ্যে লিটন দাসের ব্যর্থতাটা চোখে লেগেছে। ১১ ম্যাচের মধ্যে ৭ বার ব্যাট হাতে নেমেছেন এই ব্যাটসম্যান। কিন্তু রান? মাত্র ৬৪, সর্বোচ্চ ২৪। শুধু কুমিল্লার হিসেব করলে গত আসরের বিস্ময় আসহার জাইদি এবার হতাশ করেছেন। এবার সুযোগই পাননি, খেলেছেন মাত্র তিনটি ম্যাচ। রান করেছেন ২৯, উইকেট? একটিও নেই!
ঢাকা ডায়নামাইটসের জন্য হতাশা হয়ে এসেছে রবি বোপারা ও মাহেলা জয়াবর্ধনের পারফরম্যান্স। এমনই যে, দুজন সুযোগই পাননি খুব বেশি ম্যাচে। দুই ম্যাচে ব্যাট হাতে নেমে জয়াবর্ধনে করেছেন মাত্র ৪২ রান। বোপারা অবশ্য ম্যাচ খেলেছেন ৬টি। তাতে ব্যাট হাতে হতাশ, রান করেছেন মাত্র ৩৫, বল হাতে যদিও পাঁচ উইকেট নিয়েছেন।
বাংলাদেশের বোলারদের হিসেব করলে চোখে লেগেছে সাকলাইন সজীবের ব্যর্থতা। ঘরোয়া ক্রিকেটে অন্যতম প্রতিভাবান এই বাঁহাতি স্পিনার ৮ ম্যাচে ২৭ ওভার করেও উইকেট নিয়েছেন মাত্র ৫টি।
গতবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের হয়ে ফাইনালে দুর্দান্ত খেলা অলক কাপালি এবার ব্যর্থ। খেলেছেন এবার খুলনা টাইটানসে, সুযোগ পেয়েছেন মাত্র ছয়টি ম্যাচে। তাতে ব্যাটও হাসেনি। কাপালি রান করেছেন মাত্র ৪৩, সর্বোচ্চ ২৩। বল হাতে দুটি ওভার করেছিলেন, তাতে উইকেট পাওয়ার অবশ্য তিনিও করেছিলেন কি না, সন্দেহ আছে।
বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য বড় হতাশা হয়ে এসেছে মেহেদী হাসান মিরাজের পারফরম্যান্স। অবশ্য ব্যাট করারই তো তেমন সুযোগ পাননি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের নায়ক এই তরুণ অলরাউন্ডার, বেশির ভাগ সময় নেমেছেন শেষদিকে। বল হাতে ১৪ ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়েছেন। তবে ব্যাট হাতে পারফরম্যান্সটা করুণ, ১৪ ম্যাচে ১০ ইনিংস। রান করেছেন ৭৮, সর্বোচ্চ ৪১। অবশ্য মিরাজ ব্যাট হাতে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরার সুযোগও পেয়েছেন কম।
এই ‘ফ্লপ’দের অনেকেই আজ নামার সুযোগ পাচ্ছেন, বাকিরা বিদায় নিয়েছেন। কে জানে, সেরাটা হয়তো আজকের জন্যই জমিয়ে রেখেছেন সাকিব-ব্রাভোরা!
 Youtube video downloader Softer

Download this file here


http://up07.net/vuc6oelm0jvs
মাঠকর্মীদের ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দিলেন ‍মুশফিক



ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে প্রথমবারের মতো জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ। রোববার তৃতীয় দিনে এসে ইংল্যান্ডকে ১৬৪ রানে অলআউট করে ১০৮ রানের বড় জয় ছিনিয়ে এনেছেন মুশফিক বাহিনী।

এই জয়ের পর নিজ হাতে গ্রাউন্ডসম্যানদের ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার তুলে দেন ক্যাপটেন মুশফিকুর রহিম।

এছাড়া গ্রাউন্ডসম্যানদের পুরস্কার হিসেবে আরও এক লাখ টাকা দেয়া হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পক্ষ থেকে।

হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে স্টেডিয়ামে মোট ৬০ জন গ্রাউন্ডসম্যান আছেন। শেষ টেস্টের জন্য স্পিন সহায়ক উইকেট চেয়েছিলেন ক্যাপটেন।

তার আশা পূরণ করায় খুশি হয়ে মুশফিক এই পুরস্কার দেন।

‘একশ টেস্টও খেলতে পারে মুশফিক’


সহকারী কোচ রিচার্ড হ্যালসলের সঙ্গে মাঠের মাঝে উইকেটকিপিং অনুশীলন করছিলেন মুশফিকুর রহিম। মাঠের বাইরে থেকে দেখছিলেন হাবিবুল বাশার। মুশফিকের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক, এখনকার নির্বাচক। যখন জানতে পারলেন ৫০ টেস্ট হতে যাচ্ছে মুশফিকের, উচ্ছ্বসিত হলেন হাবিবুল, ‘তাই নাকি, দারুণ ব্যপার!’


এই ‘দারুণ’ ব্যাপারটির স্বাদ বাংলাদেশে সবার আগে পেয়েছেন হাবিবুল। সাবেক অধিনায়ক পঞ্চাশতম টেস্ট খেলেছেন ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে। পরের বছরের জুলাইয়ে টেস্ট খেলার অর্ধশতকের স্বাদ পেয়েছেন মোহাম্মদ আশরাফুল। এবার তাদের সঙ্গী হওয়ার অপেক্ষায় মুশফিক।

<script async src="//pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js"></script>
<script>
  (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({
    google_ad_client: "ca-pub-6277635802306711",
    enable_page_level_ads: true
  });
</script>

৫০ টেস্ট খেলতে পারা একজন ক্রিকেটারের জন্য কতটা বড় অর্জন, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে শোনালেন হাবিবুল।

“অনেক বড় মাইলফলক অবশ্যই। যে কোনো ক্রিকেটারের জন্য টেস্ট ম্যাচই সবার আগে। টেস্টের অর্জনগুলোই সবচেয়ে দামি। ক্যারিয়ার শেষে আপনাকে টেস্টের পারফরম্যান্স দিয়েই সবার আগে মূল্যায়ন করা হবে। ৫০টি টেস্ট খেলা কিন্তু অনেক কঠিন। কারণ টেস্ট ক্রিকেট যে কোনো ক্রিকেটারের সত্যিকারের টেস্ট। এখানে টিকে থাকা কঠিন।”

“বাংলাদেশের বাস্তবতায় তো ৫০ টেস্ট আরও বড় ব্যাপার। কারণ আমরা খুব বেশি খেলার সুযোগ পাই না। অনেক সময় লাগে ৫০ টেস্ট খেলতে।”

পঞ্চাশতম টেস্টই হয়ে থেকেছে হাবিবুলের ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট। আশরাফুলের ক্যারিয়ার থমকে আছে ৬১ টেস্টে। হাবিবুলের বিশ্বাস, বাংলাদেশের হয়ে মুশফিক খেলে ফেলতে পারে একশ টেস্ট ম্যাচও!

“আশা করি, আমরা অনেক বেশি টেস্ট খেলব সামনে। মুশফিক ১০০ টেস্টও খেলতে পারে। ওর ফিটনেস, সামর্থ্য, ওর প্রতিজ্ঞা, নিবেদন…সব কিছুই বলে, যদি আমাদের টেস্ট সংখ্যা একটু বাড়ে, তাহলে ১০০ টেস্ট খেলতে পারে মুশফিক।”

মুশফিকের এই পথচলার শুরুটা খুব কাছ থেকেই দেখেছেন হাবিবুল। তার নেতৃত্বেই ২০০৫ সালে মুশফিকের টেস্ট অভিষেক। ১৭ বছর বয়সে মুশফিকের অভিষেকের সেই সময়টা স্পষ্টই মনে পড়ে হাবিবুলের।

“ছোট্ট একটা ছেলে, খুব লাজুক। ছেলেরা সবাই অনেক মজা করত ওর সঙ্গে। তবে ওর প্রতিভা আর সামর্থ্যকে শ্রদ্ধা-সমীহ করত সবাই।”

“টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু করেছিল ব্যাটসম্যান হিসেবে। টেকনিক্যালি মুশি আমাদের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন শুরু থেকেই, সেই ১৭ বছর বয়সেই। টেকনিক্যালি সাউন্ড ছিল বলেই ওই বয়সে ইংল্যান্ডের মত জায়গায় টেস্ট অভিষেক হয়েছিল।”

হাবিবুলসহ অনেকে তখনই বুঝে গিয়েছিলেন, অনেক দূর যাবে ছেলেটি।

“ওকে তখন দেখেই মনে হয়েছে অনেক বছর খেলবে, অনেক রান করবে। টেকনিক্যালি এত সাউন্ড ব্যাটসম্যান তখনও বাংলাদেশ খুব বেশি পায়নি। অনেক সময় কিছু মনে হলেও সেটা ভবিষ্যতে সবসময় সত্যি হয় না। ওর ক্ষেত্রে হয়েছে। তবে আরও ভালো হতে পারত।”

শেষ কথাটায় একটু আক্ষেপের ছোঁয়া। শুধু শুরুর সময় নয়, মুশফিককে পরেও কাছ থেকে দেখেছেন হাবিবুল। ২০০৭ বিশ্বকাপ থেকে মুশফিকের ওয়ানডে ক্যারিয়ার নতুন গতি পায় তার নেতৃত্বেই। সে বছরের জুলাইয়ে মুশফিকের টেস্ট ক্যারিয়ার পুনরুজ্জীবিত হওয়ার সময়ও দলে ছিলেন হাবিবুল। এখন নির্বাচক হিসেবে দেখছেন মুশফিকের নেতৃত্ব, এগিয়ে চলা।

মুশফিককে খুব ভালো করে চেনেন বলেই জানেন, টেস্ট রেকর্ড হতে পারত আরও উজ্জ্বল।

“ব্যাটিং দিয়েই দলে এসেছিল, ওর ব্যাটিংটা নিয়েই বলি। ওর যে সামর্থ্য, যে ওয়ার্ক এথিক্স, আমার মনে হয়, টেস্টে ওর আরও ভালো করা উচিত ছিল। একটা ব্যাপার হলো, আমরা নিয়মিত টেস্ট খেলি না। এটা ওর পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলেছে। আমি নিশ্চিত, এখন যদি আমরা নিয়মিত খেলি সামনে, ওর ক্যারিয়ার আরও ভালো হবে।”

“সত্যি বলতে, টেস্টে ৩২ গড় ওর মতো সামর্থ্যের একজন ব্যাটসম্যানের পাশে মানায় না। তবে এখনও সুযোগ আছে। যদি আমরা নিয়মিত বেশি টেস্ট পাই, আমি বিশ্বাস করি, ওর গড় চল্লিশের ওপরে, এমনকি পঞ্চাশের কাছে থাকতে পারে। সেই সামর্থ্য ওর আছে।”

মুশফিকের নিজের প্রত্যাশা হয়ত এমনটিই। পঞ্চাশতম টেস্ট থেকে নতুন করে শুরু করতে পারেন, পঞ্চাশ গড়কে ধাওয়া।




বুধবার, ২৬ অক্টোবর ২০১৬
   
ভুলের বিশ্বরেকর্ড করলেন আম্পায়ার


বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টটি অনেকদিন মনে রাখবেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। ইতোমধ্যে স্টুয়ার্ট ব্রড বলেছেন এটা তার ক্যারিয়ারের সেরা পাঁচ টেস্টের একটি। ইংল্যান্ডের কোচ জানিয়েছেন, বাসায় বসে আরো একবার দেখার মতো টেস্ট ছিল এটি।

এ ম্যাচে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের বেশ কিছু রেকর্ড হয়েছে। পাশাপাশি হয়েছে দুটি বিশ্বরেকর্ডও। চলুন দেখে নেওয়া যাক সে বিষয়ে।

১. ধর্মসেনার ৮ ভুল সিদ্ধান্ত: বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড ম্যাচে যে ১১টি সিদ্ধান্ত ভুল প্রমাণিত হয় তার মধ্যে ৮টি সিদ্ধান্তই দিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা। এক টেস্টে যা কোনো আম্পায়ারের নেওয়া সবচেয়ে বেশি ভুল সিদ্ধান্ত এবং বিশ্বরেকর্ড। বাকি তিনটি নিয়েছিলেন ক্রিস গাফানি।

২. রিভিউ-এর বিশ্বরেকর্ড: এবারই প্রথম কোনো ম্যাচে সবচেয়ে বেশি রিভিউ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ইংল্যান্ড প্রথম টেস্টে দুই দল মোট ২৬টি রিভিউ নেয়। তার মধ্যে ১৫টিতে সফল হয়। ১১টি বাতিল করা হয়। যা একটি বিশ্বরেকর্ড।
পরাজয়ের পর যা বললেন মুশফিক

জয়টা খুব কাছেই ছিল। দরকার মাত্র ৩৩ রানের। ১০ রান যুক্ত করতেই দুই উইকেটের বিদায়। ২২ রানের পরাজয় সাথে একবুক হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়লো টাইগাররা।

এ পরাজয়ে শুধু টাইগাররা নয় হতাশ ১৬ কোটি বাঙ্গালীও। তবে হতাশ নন টাইগার দলপতি মুশফিক। ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমনটাই জানান মুশফিক।

মুশফিক বলেছেন, ‘আমরা হতাশ না। ১৫ মাস পর টেস্ট খেলতে নেমে এই কঠিন কন্ডিশনের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়ে মেলে ধরতে পেরেছি। আমরা প্রথম ইনিংসের চেয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো ব্যাট করেছি।’

ইংল্যান্ডকে শক্ত প্রতিপক্ষ উল্লেখ করে মুশফকি বলেন, ‘বর্তমান ইংল্যান্ড দলটি খুবই শক্তিশালী। যে কোন কন্ডিশনে তারা ধারাবাহিক। আর এমন কঠিন উইকেটে ইংল্যান্ডের মত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে আমরা সমান তালে লড়াই করছি। শেষ দিন পর্যন্ত খেলার ফলাফল ছিল সমান সমান।’
তীরে এসে ডুববে নাকি ভিড়বে বাংলাদেশের তরী!



 চতুর্থ ইনিংসে ২৮৬ কিংবা এর বেশি রান তাড়া করে জেতার সেই কীর্তিটাই গড়ার খুব কাছে বাংলাদেশ। কিন্তু খুব দূরেও। রান দরকার ৩৩, কিন্তু উইকেট আছে মাত্র দুটি। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত তীরে তরী ভিড়বে না ডুববে?

এ যেন টি-০র শেষ কয়েক ওভার। শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে তখন পিন পড়লেও শব্দ শোনা যাবে। ব্যাট হাতে ততক্ষণে নতুন করে আসার আলো দেখাতে শুরু করেছেন শেষ বরসা সাব্বির।

ক্রিকেটের প্রতিটি দিনই শুরু হয় আশা নিয়ে, এই আশা তবু


একটু অন্যরকম; ইংল্যান্ডের মত পরাশক্তিকে হারানোর বাস্তব সম্ভাবনা। আর এই সম্ভবনা যাকে ঘিরে তিনি আর কেউ সম্প্রতি বিজ্ঞাপন করে বিতর্কে জড়ানো বাংলাদেশ দলের উদিয়মান ব্যাটিং ভরসা সাব্বির রহমান।

সেই সাব্বির, যার এটি অভিষেক টেস্ট। সেই সাব্বির, এক সময় যার পরিচয় ছিল টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট। টেস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্নের মধ্যেই যিনি মাথায় তুলেছেন টেস্ট ক্যাপ।

সেই সাব্বিরই অসাধারণ ব্যাট করে টিকেয়ে রখেছেন আশার আলো। লোয়ার অর্ডারদের নিয়ে চেষ্টা করছেন দলে জয়ের তরী তীরে ভেড়ানোর। টানটান উত্তেজনার টেস্ট চতুর্থ দিন শেষে দাঁড়িয়ে রোমাঞ্চকর মোড়ে।

কাজটা এখনও কঠিন, তবে অসম্ভব নয়। শেষ দিনে চাই ৩৩ রান, হাতে ২ উইকেট। তবে ভরসা একমাত্র সেই। দিন শেষে সেই জয়ের স্বপ্ন যেমন টিকেয়ে রাখলেন তিনি তেমনি সোমবারের সকালটাও যেন অন্যরকম দ্যুতি ছড়িয়ে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশকে অন্য উচ্চতায় তুলে ধরুক!
২৪ অক্টোবর ২০১৬,

‘১০-১৫ ওভার ব্যাটিং করলে জয় বাংলাদেশের’



কাজটা এখনও কঠিন, তবে অসম্ভব মনে করছেন না চন্দিকা হাথুরুসিংহে। বাংলাদেশের প্রধান কোচ মনে করছেন, পঞ্চম ও শেষ দিন ১০-১৫ ওভার ব্যাটিং করা সম্ভব হলে চট্টগ্রাম টেস্ট বাংলাদেশই জিতবে।


জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শেষ দিন বাংলাদেশের প্রয়োজন ৩৩ রান। হাতে আছে দুই উইকেট।

তৃতীয় দিনে খেলা শেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা হাথুরুসিংহে বলেন, “আমাদের হাতে এখনও ৯০ ওভার রয়েছে। সুতরাং তাড়াহুড়ার কিছু নেই। এখন আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ আগামীকাল যত বেশি সময় ব্যাট করা। যদি আমরা ১০-১৫ ওভার ব্যাট করতে পারি, তাহলে আমরা লক্ষ্যে পৌঁছে যাব।

গ্যারেথ ব্যাটির হঠাৎ লাফিয়ে ওঠা বলে মুশফিকুর রহিম ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগ পর্যন্ত ম্যাচ বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণেই ছিল। তবে এরপর দ্রুত মেহেদী হাসান মিরাজ ও কামরুল ইসলাম রাব্বিকে হারিয়ে চাপে পড়ে স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত তাইজুল ইসলামকে নিয়ে দিনের বাকি সময়টুকু নিরাপদে কাটিয়ে দেন সাব্বির।

“আমরা সবাই আশায় ছিলাম, কেউ একজন সাব্বিরের সঙ্গে থাকবে। তাইজুল বা শফিউল দুই জনই ব্যাট করতে পারে। এই উইকেটে ব্যাটিং ক্রমশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে। মুশির ক্ষেত্রে বল যেভাবে লাফিয়ে উঠল তেমনটা হলে কারো কিছু করার থাকবে না। আমরা যা করতে পারি, বলের মেধা অনুযায়ী খেলা। যদি কোনো বল ভিন্ন আচরণ করে সেটা ভুলে গিয়ে পরের বলে মনোযোগ দাও।”

শেষ পর্যন্ত ফল যাই হোক শিষ্যদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন হাথুরুসিংহে।

“আমি খুশি যে, ইংল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে ম্যাচের চতুর্থ দিনেও আমরা ম্যাচে আছি। আমার মনে হয় না, চার দিন আগেও আমাদের সম্ভাবনার কথা কেউ ভেবেছিল। আমাদের একটি ভালো পরিকল্পনা ছিল


নায়লা নাঈমের কারণে সাব্বিরকে চাপে ফেললো বিসিবি


নায়লা নাঈমের সঙ্গে ক্রিকেটার সাব্বির রহমানের অভিনীত বিজ্ঞাপনটির প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আর সেই সাথে সাব্বিরকে চাপের মুখে রেখেছে বিসিবি। এই বিজ্ঞাপনকে কেন্দ্র করেই মল্ট বেভারেজ (কোমল পানীয়) অস্কারের সঙ্গে সাব্বিরের চুক্তি বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ ক্রিকেট সংস্থাটি।বিজ্ঞাপনটি একদিকে যেমন জনপ্রিয় হয়েছে, তেমনই বিতর্কিত মডেল ও অভিনেত্রী নায়লা নাঈমেরকারণে সমালোচিতও হয়েছে। বিসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিজ্ঞাপনটি কুরুচিপূর্ন এবং অশোভন। ক্রিকেটারদের বিজ্ঞাপনে কাজ করার ব্যাপারে বোর্ডের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া থাকে। সাব্বির-নাঈম অভিনীত বিজ্ঞাপনটি সেসব নির্দেশনা মানেনি বলেই এমন সিদ্ধান্ত।এমন বিজ্ঞাপন বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পারে, এমন ভাবনা থেকেই বিজ্ঞাপনটির প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। এরই মধ্যে দেশের সবগুলো চ্যানেলেই বিজ্ঞাপনটি বন্ধ করা হয়েছে। আর এতে করে ক্ষতির মুখে পড়েছে অস্কার বেভারেজ কোম্পানিটি।জানা গেছে, সবমিলিয়ে বিজ্ঞাপনে কাজ করতে ২৫ লক্ষ টাকা নিয়েছেন সাব্বির। আর বিজ্ঞাপন নির্মাণে খরচ হয়েছে পাঁচ কোটি টাকা। তাই, হুট কড়ে বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে অস্কারের কর্মকর্তারা।বিসিবির পক্ষ থেকে দু’পক্ষ অর্থাৎ, সাব্বির এবং অস্কার; উভয়কেই মেইল পাঠানো হয়েছে। তবে চট্টগ্রামে টেস্ট খেলতে থাকা সাব্বির এখনো বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি। সিরিজ শেষ করেই চুক্তির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানা গেছে।


রবিবার । ২৩ অক্টোবর ২০১৬


দিনশেষেও শুরুর সেই শট

                     

দুজনেই অলরাউন্ডার। তবে ব্যাটে-বলে কাল সাকিব আল হাসানকে ছাড়িয়ে গেছেন বেন স্টোকস, এগিয়ে তাঁর দল ইংল্যান্ডও


ঠিক নিয়ম নয়। তবে সংবাদ সম্মেলনে দিনের সেরা পারফরমারের আসাই দস্তুর। কিন্তু সাকিব আল হাসান কাল আসেন না। ৭৯ রানে ৫ উইকেট নেওয়া সত্ত্বেও। হয়তো সাতসকালে দিনের দ্বিতীয় বলে ‘পাগলামি’ শট খেলে আউট হয়ে যাওয়ার কারণেই! তবু দুই দলের সংবাদ সম্মেলনের চুম্বক অংশ সাকিবই, সকালের ওই শটের কারণে।

বাংলাদেশের অন্যদের মধ্যে কাল আর কেউ পাননি এক উইকেটের বেশি। আর ২৭ রানে শেষ পাঁচ উইকেট হারানোয় ব্যাটিংয়ে পারফরমার খোঁজা অনর্থক। অগত্যা ভরসা কোচিং স্টাফ। বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় গণমাধ্যমের সামনে। তাঁর দায়িত্বের পরিধির মধ্যে সাকিবের ব্যাটিং পড়ে না। তবে ওই দায়িত্বহীন ব্যাটিং যে বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে হতাশার রেণু ছড়িয়ে দেয়, তা বলে যান ওয়ালশ, ‘সাকিবের আউটটি ছিল ভীষণ হতাশার। অনেক প্রত্যাশা নিয়ে ও আজ ব্যাটিং করতে নামে। জানত, আমাদের মূল ভরসা সে। গতকাল খুব ভালো ব্যাটিং করেছে কিন্তু নতুন দিনে ব্যাটিং করা তো নতুন শুরু। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সাকিব আজ প্রথম ওভারে আউট হয়ে গেছে, যা আমাদের অন্য ব্যাটসম্যানদের প্রবল চাপে ফেলে দেয়।’ ইংল্যান্ডের জন্য ওই উইকেট ছিল অপ্রত্যাশিত এক উপহার। যাতে ভীষণ অবাক হওয়ার কথা স্বীকার করে যান ইংলিশ অলরাউন্ডার বেন স্টোকস, ‘সকালের দ্বিতীয় বলে অমন শট বিস্মিত করার মতোই। অবশ্যই সাকিব ওদের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। হয়তো ও ভেবেছে, মেরে খেলে আমাদের স্পিনারদের চাপের মুখে ফেলে দিতে। তবে মঈন ইনিংসজুড়ে যেভাবে বোলিং করেছে এবং উইকেট থেকে যেমন স্পিন পাচ্ছিল—তাতে ওর বিপক্ষে সাকিবের তা করা কঠিনই ছিল। ওর আউটে বাংলাদেশকে দ্রুত অলআউট করার দরজাটা খুলে যায় আমাদের জন্য।’

বাংলাদেশকে এরপর দ্রুতই অলআউট করে দেয় ইংল্যান্ড। ২৭ রানের মধ্যে শেষ পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে। এরপর নিজেরা দ্বিতীয় ইনিংসে আট উইকেটে ২২৮ রান তুললে লিড হয়ে যায় ২৭৩ রানের। চট্টগ্রামের উইকেট বিবেচনায় যা ৪৭৩ রানের মতো। তবু এখনো জয়ের আশা ছাড়ছেন না ওয়ালশ, ‘আগে আমাদের ওই শেষ দুটি উইকেট তুলে নিতে হবে। ম্যাচ এখনো উন্মুক্ত। এই পর্যায়ে যেখানে থাকলে আমরা খুশি হতাম, ইংল্যান্ড তার চেয়ে ২০-৩০ রানের মতো বেশি করেছে। আমার মনে হয়, বোলাররা আজ খুব ভালো লড়াই করেছে। একসময় তো পরিস্থিতি খুব, খুব ভালো দেখাচ্ছিল। কিন্তু এরপর ওরা ভালো এক জুটি গড়ল। এটাই টেস্ট ক্রিকেট।’ টেস্ট ক্রিকেটের জয়গানের পাশাপাশি নিজেদের জয়ের করণীয়টাও বলে দেন এই ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি, ‘আমার কাছে মনে হয়, ম্যাচ এখনো ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আমাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো ব্যাটিং করতে হবে। আর ম্যাচে তো এখনো সময় আছে। জয়-পরাজয়ের কোনো একটি ফল তাই হবে।’ জয়ের জন্য ইতিবাচক ব্যাটিং করা এবং জুটি গড়ার কথা আলাদা করে বলেন তিনি, ‘দ্বিতীয় ইনিংস ব্যাটিংয়ে আমাদের ইতিবাচক হতে হবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলতে হবে। খারাপ বল থেকে নিতে হবে রান। যদি দুটি কিংবা তিনটি জুটি গড়ে তুলতে পারি, তাহলে আমাদের ভালো সম্ভাবনা থাকবে। এখন আমাদের লক্ষ্য হতে হবে ইংল্যান্ডের লিডকে ৩০০-র মধ্যে রাখা। কাজটি সহজ না। তবে আমি মনে করি, ম্যাচে এখনো দুই দলের সমান সম্ভাবনা।’

স্বাভাবিক কারণেই ইংল্যান্ড ক্যাম্পের ভাবনাটা অন্য রকম। প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা স্টোকস তো জয়ের আগাম চিত্রনাট্য লিখে ফেলছেন, ‘উইকেটে বল ঘুরছে। আর বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনে রয়েছেন বেশ কয়েকজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। আমাদের দুই অফ স্পিনারের বিপক্ষে ওদের খেলা কঠিন হবে। এ কারণেই বলছি, লিডকে ৩২০ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারলে তা হবে দারুণ ব্যাপার। আশা করি, এরপর আমরা ওদের অলআউট করতে পারব।’ ওই ৩২০ পর্যন্ত লিড নিতে হলে হাতে দুই উইকেট নিয়ে যোগ করতে হবে আরো ৪৭ রান। উইকেটের চরিত্র বিবেচনায় যা মোটেই সহজ না। বল হাতে চার শিকারের পর ৮৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলা স্টোকস অবশ্য সতীর্থদের ওপর আস্থা রাখছেন, ‘এখনই তো ২৭০ রানের মতো এগিয়ে আছি। লিডকে যদি ৩০০, ৩১০, ৩২০ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারি, তা হবে দারুণ ব্যাপার। আমাদের ব্যাটিং লাইনের গভীরতা অনেক। ব্রডের টেস্ট সেঞ্চুরি রয়েছে, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ওকসের আছে ৯-১০টি শতরান। আমাদের তাই আরো ৫০ রান যোগ না করার কোনো কারণ নেই।’

যদি সত্যি সত্যি আরো ৫০ রান যোগ করে ইংল্যান্ড, তাহলে? বাংলাদেশের আশার টানেল সরু হতে হতে একেবারে বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। অবশ্য এ মাঠেই বাংলাদেশের নাগালের মধ্য থেকে জয় দূরে ঠেলে দিয়েছিলেন ড্যানিয়েল ভেট্টরি। খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলে নিউজিল্যান্ডকে টেস্ট হারের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন এ বাঁহাতি। তেমন কেউ কি দাঁড়িয়ে যাবেন আবার চট্টগ্রামে, এবার বাংলাদেশের হয়ে?


 


সাকিবকে টাইগার উল্লেখ করে অভিনন্দন জানালো আইসিসি


বাংলাদেশের রেকর্ড এবং মাইলফলক বয় সাকিব আল হাসান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটি নতুন রেকর্ড গড়েছেন তিনি।

আইসিসি তাকে এ জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।


টাইগার বলেও উল্লেখ করেছে আইসিসি। টেস্টে বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম ১৫০ টি উইকেট শিকার করেছেন তিনি। শনিবার দুটি উইকেট পান তিনি। এর সুবাধে এই কীর্তি গড়েন সাকিব।

সাকিবকে অভিনন্দন জানিয়ে আইসিসি লিখেছে,  Congratulations to Shakib Al Hasan on becoming the first Bangladesh bowler to take 150 Test wickets! #BestofTest - Bangladesh Cricket : The Tigers


২২ অক্টোবর ২০১৬,

এই উইকেটে কেউ ‘সেট’ নয়

http://adf.ly/1f0rYg

ক্রিজে ছিলেন ২২১ মিনিট, খেলেছেন ১৭৯ বল, তবুও উইকেটে নিজেকে থিতু মনে হয়নি তামিম ইকবালের। বাংলাদেশের এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মনে করছেন, চট্টগ্রাম টেস্টের উইকেটে কেউ ‘সেট’ নয়।


জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টের প্রথম বল থেকে সহায়তা পাচ্ছেন বোলাররা। উইকেট ক্রমশ ভাঙছে, তাই ব্যাটসম্যানদের কাজটা খুব কঠিন হয়ে পড়ছে। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে উইকেট সম্পর্কে নিজের মূল্যায়ন জানান তামিম।

“উইকেটের বিষয়ে যদি সঠিক মূল্যায়ন করতে হয় তাহলে বলতে হয়, এখানে কেউ সেট নয়। আপনি ৭০, ৮০ কিংবা ১০০ করেন তাহলেও বলব এ উইকেটে কেউ সেট না। আমার প্রতিটা রান করতে হয়েছে খুব কষ্ট করে।”




কেন থিতু হওয়া যায় না তার ব্যাখ্যাটাও দিলেন বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক।

“যদি মনে করেন যে আপনি সেট তাহলে সমস্যা তৈরি হবে। কারণ, প্রতি ওভারে একটা-দুটা বলে কিছু না কিছু হচ্ছে। এখানে খেলা সহজ নয়, খুব কঠিন উইকেট। আমরা সবাই বুঝতে পারছি এটা। কিন্তু ভালোভাবে ব্যাখ্যা করতে হলে বলব, কেউ সেট না।”

ব্যাটিং দুরূহ উইকেটে সাতটি চারে ৭৮ রানের চমৎকার এক ইনিংস খেলেন তামিম। সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে দেখছেন বিশাল সব টার্নকেই।

“বাউন্স খুব একটা বেশি অসমান না। তবে স্পিন বেশি হচ্ছে, টার্ন বেশি হচ্ছে। এক সময় সেট হয়ে গেলে ব্যাটসম্যান অনেক কিছু করতে চায়। কিন্তু তখনই খুব ভালো একটা বল হয়ে যায়। এ কারণে বললাম যদি উইকেটে নিজেকে সেট মনে করেন তাহলে ভুল হবে।”





শনিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৬

একটি উইকেটের জন্য ১১ বছর অপেক্ষা

টেস্টে একটি উইকেটের জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হল ১১ বছর। কোনো কোনো অপেক্ষা তাহলে এত দীর্ঘও হয়। ২০০৫-এর জুনে চেস্টারলি স্ট্রিট টেস্টে শেষবার তিনি মোহাম্মদ আশরাফুলের উইকেট নিয়েছিলেন। ২০১৬-র অক্টোবরে নিলেন তামিম ইকবালের উইকেট।

শুক্রবার চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয়দিন ৭৮ রানে বাইশ গজে ধাতস্থ হয়ে ওঠা তামিমকে ফেরালেন ৩৯ বছর বয়সী ইংলিশ স্পিনার গ্যারেথ ব্যাটি। অবশ্য এটা কোনো রেকর্ড নয়।

দুটি টেস্ট উইকেটের মাঝখানে দীর্ঘ বিরতির মধ্য দিয়ে যাওয়া ইংলিশ বোলার হলেন লেন হাটন। ১৯৩৯-এ টেস্টে নিজের দ্বিতীয় উইকেট নেয়ার ১৬ বছর পর ১৯৫৫-তে তৃতীয় উইকেট পেয়েছিলেন হাটন। সেটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার রিচি বেনোর।

কাল চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয়দিন তামিমকে আউট করার পর ব্যাটি যেভাবে উদযাপন করলেন তাকে কেউ কেউ বাড়াবাড়ি বললে অতিশয়োক্তি হবে না। ব্যাটি নিজেও তা স্বীকার করেছেন, ‘আমার মন হয়, বেনোকে ফিরিয়ে দেয়ার পর হাটন উদযাপনে অনেক বেশি সংযত ছিলেন।’ নিজের উদযাপন সম্পর্কে তার ব্যাখ্যা, ‘আপনি যদি গড়পড়তা খেলোয়াড় হন, তাহলে সাফল্যের প্রতিটি মুহূর্ত আপনাকে উপভোগ করতে হবে।’

৪০ ছুঁই ছুঁই বয়সে টেস্টে ফিরেছেন তিনি অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে। বলেছেন, ‘জীবনে এর আগে কখনোই এতটা নার্ভাস হইনি আমি। যতটা এবার হয়েছি। কথা হল, যখন দ্বিতীয় সুযোগ পাবেন, আপনার তখন মনে হবে, আপনি সত্যিই বেঁচে আছেন।’

অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক নতুন বল তুলে দেন তার হাতে। এমনটি আগে কখনও তার বেলায় হয়েছে বলে মনে করতে পারেন না তিনি। ১০ রান বেশি দিয়েছেন। এমনটিই মনে হচ্ছে তার। বলেছেন, ‘আমরা কিছু কিছু খুব ভালো বল করেছি। তবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরাও ভালো করেছে।’

১৭ ওভারে একটি মেডেনসহ ৫১ রান দিয়ে তার প্রাপ্তি তামিম ইকবালের উইকেট। তাতেই খুশি ব্যাটি। উইকেটটা যে তামিমের। ধীরে ধীরে যিনি এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। তাকে থামানোর আনন্দই যে আলাদা। ব্যাটি তাই সত্যিই খুশি। দ্য গার্ডিয়ান থেকে নেয়া।
   


স্তনের প্রতি পুরুষের নজরের তারিফই করলেন সানি!


 তাঁর সাফল্যই সবার নজর তাঁর দিকে ফিরিয়ে দিয়েছে৷ এক দুনিয়া ছেড়ে এসে অন্য পৃথিবীতে সবথেকে সমালোচিত হয়ে ওঠা চাট্টিখানি কথা নয়৷ সানি লিওনকে সেই সাফল্যের শিরোপা অনায়াসেই দেওয়া যায়৷ শরীরী আবেদনে তিনি পর্দায় হোক বা পর্দার বাইরেও হিল্লোল তুলতে পারেন৷ কিন্তু এ সবই সানি ফ্যাক্টর৷ আর পাঁচজনের ক্ষেত্রে তা খাটে না৷ তাহলে সানি লিওন কেন বাকি সকলকে নিজেদের স্তনের উপর নজর রাখতে বলেছেন? কেনই বা নারীর স্তনের প্রতি পুরুষের নজর দেওয়াকেও একরকম তারিফই করছেন?

আসলে এসবই তিনি করছেন নারীর স্বার্থেই৷ ভাল হোক বা খারাপ, নারী স্তনে যে পুরুষের নজর আটকে থাকে এটাই ঘটনা৷ ছুতোনাতায় পুরুষের দৃষ্টি চলে যায় সেদিকে৷ সব নারীরাই জানেন এ কথা৷ এবং কী করে সেই দৃষ্টি এড়িয়ে নিজের এগনোর পথ করে নিতে হয় হয় তাও জানেন৷ কিন্তু স্বভাব গুণে হোক বা দোষে, পুরুষরা নারী স্তনের প্রতি যতটা নজর দেন, নারীরাও তা দেন কি? যদি না দিয়ে থাকেন, তবে নারীদের ক্ষেত্রে তা মোটেও গুণ নয়, বরং রীতিমতো দোষেরই কাজ৷

সেই দোষই ধরিয়ে দিচ্ছেন সানি৷ তিনি জানাচ্ছেন, পুরুষরা নারীর স্তনের প্রতি যতটা দৃষ্টি দেন, ততটা দৃষ্টি যদি নারীরা নিজে দিতেন তাহলে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা অর্ধেক কমে যেত৷ সম্প্রতি ব্রেস্ট ক্যানসারের এক সচেতনতা প্রসার ভিডিওয় এ আর্জিই জানাচ্ছেন তিনি৷ নারীদের সচেতন করিয়ে সানি জানাচ্ছেন, স্তন ক্যানসারের বেশিরভাগ ঘটনা ধরা পড়ে স্টেজ ৩ কিংবা ৪-এ৷ যদি গোড়াতেই তা ধরা পড়ত, তাহলে সারিয়ে তোলা যেত৷ আর তাই নিজেদের প্রতি আরও মনযোগী হয়ে স্তনের প্রতি নজর দিতে অনুরোধ করলেন সানি৷ আর তার মাপকাঠিতে থেকে গেলেন পুরুষরাও৷ পুরুষের নজর যেরকম ঘোরে নারীর স্তনে, নারীর নিজের নজরও যেন সেই মাত্রায় থাকে, আর্জি সানির৷
টাইগার মিরাজের সম্পর্কে যা বললেন ভারতীয় ক্রিকেটার অশ্বিন


স্পোর্টস ডেস্ক:‘বাংলাদেশ জিতলে পুরো দেশ খুশি হবে, আর ওমান জিতলে খুশি হবে ক্রিকেট।’ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় রবিচন্দ্রন অশ্বিনের এই টুইট নিয়ে তোলপাড়ই পড়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কটা তখন একটু বিষিয়েই গিয়েছিল। তবে কালকের টুইটের পর সেই সম্পর্ক আবার মধুর হওয়ারই কথা। বাংলাদেশের নতুন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজের প্রশংসা করেছেন অশ্বিন।

এই সময়ের সেরা স্পিনার তো বটেই, ভারতের সর্বকালের সেরা স্পিনারদেরই একজন হয়ে ওঠার আভাস অশ্বিনের বোলিংয়ে। টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম বোলার হিসেবেই কয়েক দিন আগে নিয়েছেন ২০০ উইকেট। ভারতের অফ স্পিনার নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে কাল খেলেননি, হয়তো টিভি পর্দায় বা মুঠোফোনে চোখ রেখেছিলেন


চট্টগ্রাম টেস্টে। তখনই মিরাজকে চোখে পড়েছে তাঁর।

অশ্বিন প্রথম টুইট করেছিলেন সাকিবের ওই অদ্ভুত ওভারের পর। একই ওভারে তিন বলের মধ্যে দুই বার রিভিউ নিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন মঈন আলী। অশ্বিন তখন লিখেছিলেন, ‘টেস্ট ইতিহাসে লাঞ্চের পর এ রকম ওভার মনে হয় দেখিনি।’

অশ্বিনের টুইটে মন্তব্য করে সাবেক ইংলিশ ক্রিকেটার মার্ক বুচার মনে করিয়ে দিয়েছেন, সামনেই তো ইংল্যান্ডের সঙ্গে ভারতের সিরিজ। অশ্বিন তো খুশি হবেনই। অশ্বিন ইঙ্গিতটা বুঝতে পেরে পাল্টা রসিকতা করেছেন। এরপর মেহেদির প্রসঙ্গে পাল্টা মন্তব্যে লিখেছেন, ‘ঠাট্টা বাদ দিয়ে বলি, মেহেদী হাসান নামের অফ স্পিনারটা দারুণ।’

এর আগেই সেই টুইট ঝড়ের কারণেই ব্যাপারটি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। অশ্বিনের এই মন্তব্যকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশের বেশ কিছু টুইটার ব্যবহারকারী। কেউ খোঁচাও দিয়েছেন, ‘যাক অবশেষে তো অশ্বিনের মুখে বাংলাদেশ নিয়ে ইতিবাচক কিছু পাওয়া গেল।’

মেহেদী অবশ্য তখনো ইতিহাস গড়েননি। মাত্রই দারুণ দুই ডেলিভারিতে বেন ডাকেট ও গ্যারি ব্যালান্সকে আউট করেছেন । পরে তো আরও চার উইকেট পেয়েছেন।

অশ্বিন কদিন আগে পাকিস্তানের লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহকে নিয়েও প্রশংসা করে টুইট করেছেন। এমন এক সময়, যখন পুরো ভারতজুড়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বললেন সবাই। বলিউডে পাকিস্তানি শিল্পী খেদাও স্লোগান উঠে গেছে। পাকিস্তানি কোনো শিল্পীর পক্ষে বললেই বরং রোষানলে পড়তে হচ্ছে।


শুক্রবার । ২১ অক্টোবর ২০১৬। ৬ কার্তিক ১৪২৩ । ১৯ মহররম ১৪৩৮

           স্পিনের জবাব স্পিনে দিচ্ছে ইংল্যান্ড



ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ২৯৩ রানে অল আউট। সবক'টি উইকেট বাংলাদেশের স্পিনারদের। স্পিনের জবাব চট্টগ্রামে স্পিনেই দিতে শুরু করেছে ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় দিনে লাঞ্চের আগে শেষ ওভারে অফ-স্পিনার মঈন আলি জোড়া আঘাত হেনেছেন। চার বলের মধ্যে তুলে নিয়েছেন ইমরুল কায়েস (২১) ও মুমিনুল হকের (০) উইকেট। কোনো উইকেট না হারিয়ে ২৯ রান ছিল বাংলাদেশের। তারা লাঞ্চে গেছে ২ উইকেটে ২৯ রান নিয়ে।  
http://adf.ly/1ezvDF

এর আগে দ্বিতীয় দিনের সকালে তাইজুল ইসলাম ও অভিষিক্ত মেহেদী হাসান মিরাজের বোলিংয়ে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস। বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল আগের দিন ৩৬ বলে ৩৪টি ডট দিয়েছিলেন। ১৭ ওভারের ৮টি ছিল মেডেন। রান দিয়েছিলেন সাকুল্যে ২৮। ফিল্ডার মিস না করলে একটি উইকেট পেতেই পারতেন। কিন্তু কোনো উইকেট না নিয়ে প্রথম দিন শেষ করার আক্ষেপটা দ্বিতীয় দিন সকালে মাঠে পা রেখেই মিটিয়েছেন তাইজুল। তার ঘূর্ণিতেই দ্বিতীয় দিনের সকালে ধুঁকতে ধুঁকতে ২৯৩ রানে অল আউট হয়েছে ইংলিশরা। তাইজুল নিয়েছেন ২ উইকেট। বাকিটা মেহেদীর। দেশের পক্ষে অভিষেকে দ্বিতীয় সেরা বোলিংয়ের কীর্তি তার।

৭ উইকেটে ২৫৮ রান নিয়ে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এই দিন শুরু ইংল্যান্ডের। ৩৬ রানে দাঁড়ানো ক্রিস ওকসের ৯টি ও ৫ রানে থাকা আদিল রশিদের ১০টি ফার্স্ট ক্লাস সেঞ্চুরি আছে। এমন অল-রাউন্ডারের দলকে আরেকটি ধাক্কায় দ্রুত অল আউট করা যাবে তো? এই প্রশ্ন সামনে রেখে মুশফিকুর রহিমের দল মাঠে। এবং দিনের প্রথম বলেই তাইজুলকে খেলতে গিয়ে না বুঝে মুমিনুল হককে ক্যাচ দিয়ে দিলেন ওকস।

আগের দিনে অভিষেকে ৫ উইকেট নিয়ে ইংলিশদের বড় ক্ষতি করা মেহেদী হাসান মিরাজ অন্য প্রান্তে চাপ বাড়িয়েছেন। লাভটা তুলেছেন তাইজুল। আরো ৩১ রান পর তাইজুলকে তুলে মারলেন আদিল (২৬)। কভারে অসম্ভব ক্ষিপ্রতায় দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়েছেন সাব্বির রহমান।

তাইজুলের পরের ওভারেই ঠিক ২৯০ রানের সময় অল আউট হতে পারতো ইংল্যান্ড। আধুনিক প্রযুক্তি বাঁচিয়েছে তাদের। আগের দিন মঈন আলি তিনবার আউট হয়ে তিনবারই রিভিউ নিয়ে বেঁচেছিলেন। তাকে আউট দেওয়া আম্পায়ার ছিলেন লঙ্কান কুমার ধর্মসেনা। এদিন তার সিদ্ধান্তে ব্রড আউট তাইজুলের বলে। কিন্তু রিভিউতে ডিআরএসের কল্যাণে ব্রড নট আউট। ধর্মসেনাকে আবার সিদ্ধান্ত বদলাতে হয়!

তবে কিছুক্ষণের মধ্যে মেহেদী আঘাত হানেন। ব্রডকে (১৩) রিভিউতেই আউট করে অল আউট করেন ইংল্যান্ডকে। এটি মেহেদীর ষষ্ঠ উইকেট। অভিষেকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সেরা বোলিং ফিগারের ইতিহাস গড়ে প্রথম ইনিংস শেষ করলেন মেহেদী। ৩৯.৫ ওভারে ৮০ রানে ৬ উইকেট। ইকোনমি মাত্র ২.১৮ বছরের বোলারের কি দারুণই না বোলিং!
21 oct 2016


জ্বলেই নিভতে আসেননি  মিরাজ

http://adf.ly/1eziZN

স্বপ্নের ঝড় তুলে তাঁর আগমন। ইন্দ্রজালের বিভা ছড়িয়ে তাঁর আবির্ভাব। টেস্ট অভিষেকে পাঁচ উইকেট নিয়ে কাল বাংলাদেশের ক্রিকেটাকাশ রাঙিয়ে দেন ১৮ বছরের তরুণ মেহেদী হাসান। আর এ যেন ক্রিকেট-ঈশ্বরের নিজ হাতে লেখা চিত্রনাট্য! নইলে অভিষেকটা কেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই হবে!

ইংল্যান্ডের সঙ্গে তাঁর স্বপ্নের এক আশ্চর্য যোগসূত্র রয়েছে। ২০১০ সালে অনূর্ধ্ব-১৪ জাতীয় পর্যায়ে বিভাগীয় সেরা ব্যাটসম্যান হন। পুরস্কারের ২৫ হাজার টাকা মেহেদীর হাতে তুলে দেওয়া হয় ওই বছর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড ওয়ানডে ম্যাচের আগে। ওই প্রথম স্বপ্নের নায়ক সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমদের চর্মচক্ষে দেখা। তখনই তাঁর প্রতিজ্ঞাটা শাণিত হয় আরো, ‘এক দিন জাতীয় দলে আমাকে খেলতেই হবে।’ বাংলাদেশের সেই জার্সি মেহেদীর গায়ে ওঠে ওই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই! কাল তাই দিনশেষে কণ্ঠে অবিশ্বাস মাখিয়ে বলে যান, ‘মানুষ স্বপ্নে যেমন দেখে, সবই কি মিলে যায়! আমার বেলায় তো এক্কেবারে মিলে গেল! বিশেষত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক, সেখানে এমন পারফরম্যান্সের পর মনে হচ্ছে—সবই আল্লাহর ইচ্ছা।’

মেহেদী তো এমন অবাক হবেনই! তবে আর অবাক হন না কাল চট্টগ্রাম থেকে ফোনে ভেজাকণ্ঠ বাবার সঙ্গে কথা বলার সময়। তিনি যে সেই ২০১০ সালেই সন্তানকে স্বপ্নের পথে দৌড়ানোর অনুমোদন দিয়ে দেন! তাঁর এই বাবা খুলনায় গাড়ি চালিয়ে সংসার চালাতেন। ছেলে ক্রিকেটের নেশায় মেতে থাকায় দিয়েছেন কত বকুনি! কত পিটুনি! কারণ তাঁর ধারণা, ক্রিকেট খেললে খারাপ সঙ্গে পড়ে সন্তান খারাপ হয়ে যাবে। অথচ সেই সন্তান এখন পুরো দেশের গর্ব! ২০১০ সালে সেই পুরস্কার নেওয়ার সময় বাবাকে সঙ্গে নিয়ে যান মেহেদী। স্টেডিয়ামে বসিয়ে দেখান বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড ওয়ানডে। সেখানে ক্রিকেট ও ক্রিকেটারদের কদর দেখে আর বাধা দেননি। কাল সেই সন্তান পাঁচ উইকেট পাওয়ার পর ফোনে কথা বলার সময় বাবার কণ্ঠ ভিজে উঠবে না কেন!

বাংলাদেশের জার্সি পরে মাঠে নামাই তো স্বপ্নপূরণ, সেখানে এমন পারফরম্যান্স! দিনশেষে প্রতিক্রিয়া জানানোর সময় মেহেদীর খুশি যেন ধরে না, ‘অনেক ভালো লাগছে। এ দিনটার কথা আমার সারা জীবন মনে থাকবে।’ আর তাঁর বোলিং যে নিজের স্বপ্নকেও ছাড়িয়ে গেছে, তাও অকপটে জানান তিনি, ‘এতটা ভাবিনি যে আমি পাঁচ উইকেট পাব। চিন্তা ছিল, প্রথম ম্যাচে নিজেকে আস্তে আস্তে মানিয়ে নেওয়ার। ভেবেছিলাম, পারফরম্যান্সটা যেন গড়পড়তা হয়। একটি-দুটি উইকেট পেলাম, ব্যাটিংয়ে ৩০ রানের মতো করলাম—এমন আর কি! আজকের পারফরম্যান্স আসলে আমার প্রত্যাশার বাইরে।’ দল থেকেও যে তাঁর কাঁধে প্রত্যাশার জোয়াল চাপিয়ে দেওয়া হয়নি, তাও বলেছেন মেহেদী, ‘টিম ম্যানেজমেন্টও পাঁচ-ছয় উইকেটের আশা করেনি। আমার কাছে তাদের চাওয়া ছিল, আমি যেন মোটামুটি ভালো করি। যেন ভালো জায়গায় বল করি। উইকেট না পেলেও এ নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা ছিল না।’

অথচ এই মেহেদী কাল দিনজুড়ে হয়ে থাকেন ইংল্যান্ডের দুশ্চিন্তা। এ ক্ষেত্রে অধিনায়কের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেন না, ‘‘আমার প্রথম বলটিই অনেক টার্ন করেছে। এরপর মুশফিক ভাই বারবার বলছিলেন, ‘বলগুলো স্টাম্পে রাখিস। তাহলে এলবিডাব্লিউ, বোল্ড হওয়ার সুযোগ থাকবে।’ শুরুর কয়েক ওভার বাইরে বাইরে বোলিং করেছি। ওরা সেগুলো সহজে ছেড়ে দিচ্ছিল। তবে যখন বুঝতে পারলাম, স্টাম্প বরাবর বোলিং করলে ফল পাব, সে চেষ্টা করেছি। তাতেই পেয়েছি সফলতা।’’ সফলতা বলতে পাঁচ-পাঁচটি উইকেট। এর মধ্যে শেষ শিকার বেশি প্রিয় মেহেদীর, ‘উইকেট সবগুলোই ভালো লেগেছে। তবে বোল্ড করে পঞ্চম যে উইকেট পেলাম, তা ভালো লেগেছে বেশি।’ কেন? ‘বলটা উইকেটে পড়ে সোজা গেছে। কিভাবে কী হলো, ও বোঝেনি। আমিও বুঝিনি’—কৈশোরের সারল্যে মেহেদীর স্বীকারোক্তি।

অভিষেকে বাজিমাত করা খুলনার এই অলরাউন্ডার কাল বেশি করে স্মরণ করেন দুজনকে। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের কোচ সোহেল ইসলাম এবং খুলনার সতীর্থ বাঁহাতি স্পিনার আবদুর রাজ্জাককে। তাঁদের কথা বলতে গিয়ে যেন কৃতজ্ঞতায় বুজে আসে মেহেদীর কণ্ঠ, ‘‘অনূর্ধ্ব-১৫ দল থেকে আমাকে গাইড করে আসছেন সোহেল স্যার। কিভাবে উন্নতি করা যায়, ওনার সঙ্গে সব সময় কথা বলি। আর খুলনায় জাতীয় লিগে খেলার সময় রাজ ভাইও আমাকে খুব সাহায্য করেছেন। উনি সব সময় একটা কথা বলেন, ওখানে যেমন বোলিং করি, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও যেন তা-ই করি। বলেছেন, ‘তুই এক জায়গায় বোলিং করবি, কোনো বৈচিত্র্যের প্রয়োজন নেই। এক জায়গায় বোলিং করলে তোর বল কেউ খেলতে পারবে না।’ এটা আমার মাথায় সব সময় কাজ করেছে।’’

আর প্রতিজ্ঞার কথাও নিশ্চয়ই ভুলে যাননি মেহেদী। সর্বশেষ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। গত বছর আগস্টেই শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ইনডোরে নিজের স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে তাঁর উচ্চারণ, ‘আগামী দুই বছরের মধ্যে জাতীয় দলে ঢুকতে চাই। আর একবার ঢুকলে অন্তত ১০ বছর টানা খেলতে চাই।’ প্রথম স্বপ্নপূরণ হয়েছে। আর তাতে প্রথম দিনেই মেহেদীর এমন পারফরম্যান্স যে, তাঁর দ্বিতীয় স্বপ্নপূরণের বিপক্ষে এই মুহূর্তে অ